অপরাধপ্রবণতা থেকে কেবল রাজনীতিক নয়, প্রশাসনিক কার্যক্রমকেও মুক্ত করতে হবে
- আপলোড সময় : ১৬-০১-২০২৫ ০৮:১১:০০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৬-০১-২০২৫ ০৮:১১:০০ পূর্বাহ্ন
প্রসঙ্গটি শান্তিগঞ্জ উপজেলার। একটি সংবাদে প্রকাশ “... এক যুগ আগে গ্রামের পার্শ্ববর্তী ‘নিতাই’ নদীতে একটি সেতু নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় চলাচলে চরম ভোগান্তিতে শিমুলবাঁকসহ ৭টি গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ। হেমন্তে পায়ে হেঁটে চলাচল করলেও বর্ষায় নৌকাই একমাত্র ভরসা এই গ্রামগুলোর। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসলেও উপেক্ষিত থাকে জনদাবি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভোটের রাজনীতিতে বিভিন্ন সময় দাবির পক্ষে আওয়াজ তুললেও কার্যকর না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তাই কালবিলম্ব না করে দ্রুত সময়ে শিমুলবাঁক সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জানাযায়, উপজেলার শিমুলবাঁক, রঘুনাথপুর, গোবিন্দপুর, লালখালি, বাদরপুর, উগলিসহ ৭ গ্রামের বাসিন্দাদের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে ২০১২ সালে নিতাই নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর। কিন্তু শিমুলবাঁক গ্রাম থেকে তেওইক্কা গ্রামে পর্যন্ত সড়কপথ না থাকায় কাজে আসেনি বহুল প্রতিক্ষিত সেতুটি। হেমন্তে কাচা পথ দিয়ে সিএনজি, মোটরবাইকসহ অন্যান্য পরিবহন চলচল করলেও সেতুতে অ্যাপ্রোচ না থাকায় থেমে যায় নিতাই নদীর পাড়ে। সেখান থেকেই হেঁটে অন্যত্র যান স্থানীয়রা।”
এই উদ্ধৃতিটার অবতারণা একেবারে ফালতু কীছু নয়, বরং এর ভেতরে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থাকাঠামো উন্নয়নে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অবহেলার চিত্র মূর্তায়িত হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। তাঁদের যুক্তি উক্ত সংশ্লিষ্ট স্থানের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে যেভাবে বেহাল দশায় রেখে দিয়ে অকেজো করে রাখা হয়েছে ঠিক তেমনিভাবে দেশের আর্থসামাজিক বিন্যাসকাঠামোকেও প্রকারান্তরে অকেজো করে রাখা হয়েছে। নিতাই নদীর উপর নির্মিত অ্যাপোচবিহীন সেতুটি কাজে আসছে না, তদুপরি শিমুলবাঁক গ্রাম থেকে তেওইক্কা গ্রাম পর্যন্ত সড়কপথও নেই। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহালদশার সঙ্গে আমাদের দেশের রাজনীতিক সমাজের কার্যকলাপের তুলনা করাই যায়। উভয়ের অবস্থা একই রকমের। কারণ স্বাধীনোত্তরকাল থেকে আজ পর্যন্ত, দীর্ঘ সময়জুড়ে রাজনীতিক সমাজ দেশ পরিচালনা করে দেশটাকে বেহাল দশায় ফেলে রেখেছেন। সংবিধানে সমাজতন্ত্রের প্রত্যয় ঘোষণা করে দেশের আর্থসামাজিক বিন্যাস কাঠামো সাজানো হয়েছে মুক্তবাজর অর্থনীতির নিয়মে নয়া সা¤্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিকতার নীতির কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং পরিণতিতে সমাজতন্ত্র তো অনেক দূর গণতন্ত্রের সুবাতাসটুকুও দেশের ফুসফুসে সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি এবং হচ্ছে না, বরং এখন এই মুহূর্তে দেশ চলেছে আগণতান্ত্রিক সরকারের ঘাড়ে চড়ে বিদেশী নির্ভরতার দ্বারোৎমোচন করতে। একই বলে ‘অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’। আমাদের সড়কের অবস্থা যেমন বেহাল, তেমনি বেহাল আমাদের রাজনীতিক ও আর্থনীতিক নীতি এবং রাজনীতিক ও প্রশাসনিক সংগঠনের কার্যক্রম। রাজনীতির নামে দেশের এমন বেহাল দশা করে রাখা একটি অমার্জনীয় অপরাধ। এই অপরাধপ্রবণতা থেকে কেবল রাজনীতিক নয় সকল প্রকার প্রশাসনিক কার্যক্রমকেও মুক্ত করতে হবে। অন্যথায় নয়া ঔপনিবেশিকতার পতাকা তলে উত্থিত নরকযন্ত্রণা ভোগ করার জন্যে জনসমাজকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ